দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে এবার ভুট্টা চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনার আশা করছে ভুট্টা চাষিরা। বর্তমান সময়ে ভুট্টাক্ষেতে কীটনাশক,সেচ ও ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।আমাদের বাংলাদেশের বেশি ভাগ মানুষ কৃষির নির্ভরশীল।
তাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ভুট্টাকে কৃষি সম্ভাবনাময় ফসল হিসেবে বেচে নিয়েছে কৃষকরা। আগাম জাতের ভুট্টা চাষে পোঁকা মাকরের আক্রমণ এবং রোগবালাই খুব কম হয়। তাই কৃষকগণ আগাম জাতের ভুট্টা চাষে বেশি আগ্রহী। আর যেহেতু ভুট্টা চাষে অল্প পরিশ্রম এবং কম খরচে কম সময়ে ভুট্টার ভালো ফলনে বেশি দাম পাওয়া যায় সেকারণেই ভুট্টা চাষে বেশি মনযোগ দিয়েছে এই উপজেলার কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ভুট্টার চাষে অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় স্বল্প খরচে যথাসময়ে কৃষকরা এবার ভুট্টার বাম্পার ফলনে সম্ভাবনা রয়েছে। এই মৌসুমে ৭৩২৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে।
৩০ মার্চ (বুধবার) সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভুট্টা চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রথমে ২০ কেজি পটাস, ২৫ কেজি ফসফেট, ১০ কেজি জিপ সার, ১ কেজি বরন, ১ কেজি দানাদার ও ১ কেজি সালফার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে জমি তৈরি করে বিঘাপ্রতি ৩ কেজি ভুট্টার বীজ বোপন করেন কৃষকরা। ১ মাসের মাথায় আইল বেঁধে বিঘাপ্রতি ২৫ কেজি ইউরিয়া, ২০ কেজি ডেপ ও ২ কেজি থিওভিট ছিটিয়ে ক্ষেতে পানি সেচ দেন তারা। বীজ বপনের ৯০ দিনের মধ্য ভুট্টা কাটা-মাড়াই করে থাকেন কৃষকরা এবং ভুট্টার বীজ বপন থেকে কাটা-মাড়াই পর্যন্ত বিঘাপ্রতি কৃষকের খরচ হয় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে প্রতি বিঘায় ৪০ থেকে ৫০ মণ ভুট্টা উৎপাদন হয়।
উপজেলার ছাতিয়ান গড় গ্রামের ভুট্টা চাষী আলতাফ হোসেন জানান, ধানের তুলনায় ভুট্টা চাষ করতে খরচ কম। ফলে ভুট্টা চাষ লাভজনক।
বর্তমানে আমি ভুট্টার ক্ষেতে সেচ দিচ্ছি। মাসের শেষ দিকে ফলন ঘরে তোলা যাবে বলেও জানান তিনি।
এছাড়াও উপজেলার আরও কয়েকজন ভুট্টা চাষি বলেন, প্রতি শতক জমিতে প্রায় ২মন করে ভুট্টা উৎপাদিত হয়। যা উৎপাদনের খরচের চেয়ে দ্বিগুন লাভ হয়। শুধু তাই নয় ভুট্টারকান্ড জ্বালানি,গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে পাতা ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ভুট্টার আটা, মৎস খাদ্য, মুরগীর খাবার সহ নানা তালিকায় রয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভুট্টার বীজ বপন করা হয়। প্রতিবিঘা জমিতে প্রায় পাঁচ কেজি ভুট্টার বীজ ব্যবহার করা যায়। এরই মধ্যে গাছে ফলন এসেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এপ্রিল মাসের শেষ দিকে ক্ষেত থেকে ভুট্টা সংগ্রহ ও মাড়াই করে ঘরে তুলা যাবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।